বিশ্ব থ্যালাসেমিয়া দিবস, ২০১৭ পালিত
আজ ৮ই মে, ২০১৭। বিশ্ব থ্যালাসেমিয়া দিবস। হেমাটোলজি সোসাইটি অব বাংলাদেশের উদ্যোগে রাজধানীর বারডেম অডিটোরিয়ামে এক আলোচনা সভা ও কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় বক্তারা বলেন যে বাংলাদেশে প্রতিবছর ৫,৪৭৭ জন থ্যালাসেমিয়া আক্রান্ত শিশু জন্ম নেয়। যদিও এদের সকলেই রক্ত পরিসঞ্চালনের উপর নির্ভরশীল নয়। তবে সংখ্যাটা যে অনেক বেশী তা বলাই বাহুল্য। বিভিন্ন প্রকারের থ্যালাসিমিয়ার মধ্যে হিমোগ্লোবিন-ই সংখ্যা সবচেয়ে বেশী। বাংলাদেশের মোট জনসংখ্যার শতকরা ৪.১ ভাগ মানুষ বিটা থ্যালাসিমিয়া এবং ৬.১ ভাগ মানুষ হিমোগ্লোবিন-ই’র ত্রুটিপুর্ণ জিন বহন করে। পার্বত্য চট্টগ্রামের উপজাতিদের মধ্যে হিমোগ্লোবিন-ই’র প্রকোপ ৪১.৭% বলে জানানো হয়। তবে শতকরা কত ভাগ থ্যালাসিমিয়ায় আক্রান্ত মানুষ রক্ত পরিসঞ্চালনের উপর নির্ভরশীল তার কোন সঠিক পরিসংখ্যান নাই। অধ্যাপক ডাঃ তাসমীম ফারহানা সঞ্চালিত ওয়ার্কশপে বৈজ্ঞানিক প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ডাঃ মোঃ কামরুল হাসান, ডাঃ আমিন লুতফুল কবির, ডাঃ অখিল রঞ্জন বিশ্বাস ও ডাঃ তাসনিম আরা। বিশেষজ্ঞ প্যানেলের মধ্যে ছিলেন অধ্যাপক ডাঃ সালমা আফরোজ, অধ্যাপক ডাঃ এমএ খান ও অধ্যাপক ব্রিগেডিয়ার ডাঃ আবু ইউসুফ। কোচেয়াম্যান হিসেবে উপস্থিত ছিলেন অধ্যাপক কর্নেল (অবঃ) আব্দুল হাই। তারা বহির্বিশ্বে ও বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে থ্যালাসিমিয়ার প্রকোপ, এই রোগের প্রকৃতি ও লক্ষণ, নির্নয়ের উপায় এবং তার চিকিৎসা ও প্রতিরোধ সম্পর্কে আলোচনা করেন। ওয়ার্কশপের চেয়ারম্যান অধ্যপক ডাঃ এবিএম ইউনুস চিকিৎসার জন্য রক্তরোগের বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ নেয়ার জন্য রোগী ও তাদের অভিভাবকদের প্রতি আহ্বান জানান। তবে দেশে থ্যালাসিমিয়ার নামে যেসব সমিতি আছে তাদের কাছে রক্ত, অর্থ ও কারিগরি সহযোগিতা নেয়া যেতে পারে বলে মত প্রকাশ করেন। তিনি তার বক্তব্যে বিভিন্ন দেশের উদাহরণ তুলে ধরে বাধ্যতামূলক বিবাহপুর্ব রক্ত পরীক্ষার জন্য আইন প্রণয়নের প্রতি গুরুত্বারোপ করেন। আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে বারডেম জেনারেল হাসপাতালের মহাপরিচালক ও বিশিষ্ট শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ডাঃ নাজমুন নাহার দেশের থ্যালাসিমিয়া রোগীদের চিকিৎসার জন্য দেশের সকল চিকিৎসকের উপযোগী একটি গাইডলাইন তৈরির উপর গুরুত্ব আরোপ করেন। এ ব্যাপারে তিনি বাংলাদেশ সরকারের সরকারের সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিবর্গের সহযোগিতা কামনা করেন। তিনি নবজাতক ও শিশু চিকিৎসক সমিতির সাথে এক যোগে কাজ করার আহ্বান জানান। তিনি তার বক্তব্যে বিবাহপুর্ব রক্ত পরীক্ষা ও নিকটাত্মীয়ের মধ্যে বিবাহ না করার জন্য জনসচেতনতা সৃষ্টির প্রতি গুরুত্বারোপ করেন। এব্যাপার সমাজের বিভন্ন পর্যায়ের নেতা, শিক্ষক, মসজিদের ইমাম ও কাজীদেরকে অন্তর্ভুক্ত করার জন্য হেমাটোলজি সোসাইটি অব বাংলাদেশের নেতৃবৃন্দের প্রতি আহ্বান জানান। আলোচনা সভায় স্বাগত বক্তব্যে সোসাইটির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ডাঃ মাহবুবুর রহমান উপস্থিত সবাইকে এবং সার্বিক সহযোগিতার জন্য রেনেটা লিমিটেডকে ধন্যবাদ জানান। সভায় সভাপতিত্ব করেন হেমাটোলজি সোসাইটি অব বাংলাদেশের সভাপতি অধ্যাপক ডাঃ মাসুদা বেগম।
Last Updated on 08/05/2017 by Editorial Staff
Comments
বিশ্ব থ্যালাসেমিয়া দিবস, ২০১৭ পালিত — No Comments
HTML tags allowed in your comment: <a href="" title=""> <abbr title=""> <acronym title=""> <b> <blockquote cite=""> <cite> <code> <del datetime=""> <em> <i> <q cite=""> <s> <strike> <strong>